আমরা মুসলিম। আমাদের ধর্মের নাম ইসলাম। ইসলামের মূল কথাই হলো ইমান। ইমান অর্থ বিশ্বাস। ইসলামের মূল বিষয়গুলোকে মনেপ্রাণে বিশ্বাস করাকে ইমান বলে ৷
ইসলামের মূল বিষয়গুলোকে অন্তরে বিশ্বাস করা, মুখে স্বীকার করা এবং সেই অনুসারে আমল করাই হলো প্রকৃত ইমান। যার ইমান আছে তাকে বলে মুমিন ।
আকাইদ হলো আকিদা শব্দের বহুবচন। আকিদা অর্থ বিশ্বাস। আর আকাইদ মানে বিশ্বাসমালা। একজন মুসলিমের ইমান ও আকাইদ বিশুদ্ধ হওয়া প্রয়োজন ।
আল্লাহ
আযরাইল (আঃ)
নবিগণ
রাসুলগণ
আমরা মানুষ। আমরা নিজে নিজে সৃষ্টি হইনি । আমাদের সৃষ্টি করেছেন মহান আল্লাহ। আমরা যে পৃথিবীতে বাস করছি তাও নিজে নিজে সৃষ্টি হয়নি। এ সুন্দর পৃথিবীও সৃষ্টি করেছেন আল্লাহ তায়ালা। আমাদের জন্য যা যা প্রয়োজন সেসবও তিনিই সৃষ্টি করেছেন।
কতো বিশাল এই পৃথিবী। এতে আছে পাহাড়-পর্বত, নদী-নালা, খাল-বিল ও গাছপালা । আছে নানা-রকম ফলফলাদি ও ফুল-ফসল। আরও আছে নানা-রকম পশুপাখি ও জীবজন্তু। এ সবই সৃষ্টি করেছেন মহান আল্লাহ। তিনি এসব সৃষ্টি করেছেন আমাদের জন্য। তিনিই আলো-বাতাস, পানি ও মাটি সৃষ্টি করে সকল সৃষ্টিকে বাঁচিয়ে রাখেন, লালন-পালন করেন। আমরা জাতীয় কবির সাথে কণ্ঠ মিলিয়ে বলব-
এই শস্য-শ্যামল ফসল ভরা মাটির ডালি খানি
খোদা তোমার মেহেরবাণী ।
আমাদের মাথার উপর আছে দিগন্তজোড়া বিশাল আকাশ। আকাশে আছে চন্দ্ৰ, সূর্য, গ্রহ, নক্ষত্র। পৃথিবীর চেয়ে লক্ষ লক্ষ গুণ বড় এক একটি নক্ষত্র। আরও আছে অসংখ্য ছায়াপথ। আর নীহারিকাপুঞ্জ। একসময় এসব কিছুই ছিল না। এসব কে সৃষ্টি করেছেন? এসবও সৃষ্টি করেছেন মহান আল্লাহ। তিনি এসব শুধু সৃষ্টিই করেন নি, অত্যন্ত সুন্দরভাবে রক্ষণাবেক্ষণও করছেন এবং সুন্দরভাবে পরিচালনা করছেন। তিনি সকল সৃষ্টির মালিক। তিনি সর্বশক্তিমান ৷
আকাশ ও সৌরজগৎ
মহান আল্লাহ এক, অদ্বিতীয়। তাঁর কোনো শরিক নেই। তাঁর সত্তা ও গুণের সাথে তুলনা করা যায় এমন কোনো কিছুই নেই। তিনি অনাদি, অনন্ত ।
আমরা জানব ও বিশ্বাস করব—
ক. আমাদের স্রষ্টা আল্লাহ ৷
খ. আসমান-জমিন ও এ দুইয়ের মধ্যে যা কিছু আছে সবকিছুই সৃষ্টি করেছেন আল্লাহ ।
গ. মহান আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয় এবং অতুলনীয়। তাঁর কোনো শরিক নেই ।
পরিকল্পিত কাজ: ‘আল্লাহ তায়ালার পরিচয়'-শিক্ষার্থীরা সংক্ষেপে নিজ নিজ খাতায় লিখবে। |
আল্লাহু মালিকুন অর্থ আল্লাহ মালিক। মালিক অর্থ অধিপতি। পরম দয়ালু আল্লাহ তায়ালা আমাদের সৃষ্টি করেছেন। তিনি আমাদের বসবাসের জন্য পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। কতো বড়, কতো সুন্দর এই পৃথিবী। এতে আছে পাহাড়-পর্বত,খাল-বিল, নদী-নালা, পশুপাখি, জীবজন্তু, গাছপালা ও ফুল-ফসল। এসবের মালিক আল্লাহ ।
মাটির উপরে যেমন ছোট-বড় অসংখ্য সৃষ্টি আছে, মাটির নিচেও আছে অনেক কিছু। আছে তেল, গ্যাস, কয়লা, লোহা, সোনা, হীরা। আরও কতো কিছু। এসবের মালিকও মহান আল্লাহ।
আমাদের মাথার উপরে আছে বিশাল আকাশ। আকাশে আছে চন্দ্র, সূর্য, নক্ষত্র ও তারা। আরও আছে গ্রহ, উপগ্রহ, ছায়াপথ ও নীহারিকাপুঞ্জ। এ বিশাল পৃথিবীর চেয়েও লক্ষ লক্ষ গুণ বড় এক একটি নক্ষত্র। এসব কিছুরও মালিক আল্লাহ তায়ালা।
কুরআন মজিদে আছে, “আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে সব কিছুরই মালিক আল্লাহ।” আল্লাহ আমাদেরও মালিক। পরম দয়ালু আল্লাহ এসব কিছুই আমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন। আর আমাদের সৃষ্টি করেছেন তাঁর ইবাদতের জন্য। আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছায় আমাদের জন্ম হয়। তাঁর ইচ্ছায় আমরা বেঁচে থাকি। আবার তাঁর ইচ্ছায়ই আমাদের মৃত্যু হয়। তিনি আমাদের জীবন-মৃত্যুর মালিক। আমাদের ধনসম্পদের মালিক আল্লাহ। আমাদের সুখ-দুঃখের মালিকও তিনি। তাঁর মালিকানায় কোনো শরিক নেই।
আমরা কবির কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে বলব:
কুল মাখলুক আল্লাহ তায়ালা
তোমার দয়ার দান
তুমিই সবার স্রষ্টা পালক
সর্বশক্তিমান ৷
বাদশাকে করো নিমিষে ফকির
ফকিরকে করো ধরার আমীর
জীবিতকে তুমি করিতেছো মৃত
মৃতকে দিতেছো প্রাণ ॥
—কবি সাবির আহমেদ চৌধুরী
আমরা বিশ্বাস করি, আসমান জমিনের মালিক আল্লাহ। দুনিয়ার সকল ধনসম্পদের মালিক আল্লাহ। আমাদের সুখ-দুঃখের মালিক আল্লাহ। আমাদের জীবন-মৃত্যুর মালিকও আল্লাহ। আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ভালো কাজ করব।
পরিকল্পিত কাজ : ‘আল্লাহ সবকিছুর মালিক’। এ বিষয়ের উপর শিক্ষার্থীরা ৫টি বাক্য খাতায় লিখবে। |
আল্লাহু কাদীরুন। কাদীর অর্থ সর্বশক্তিমান। তাঁর মতো শক্তি আর কারও নেই। সর্বশক্তিমান আল্লাহ মানুষ সৃষ্টি করেছেন। তিনি মানুষের জন্য এই বিশাল পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। পাহাড়-পর্বত, সাগর-মহাসাগর সৃষ্টি করেছেন । গাছপালা, পশুপাখি, জীবজন্তু এসব তিনিই সৃষ্টি করেছেন ।
আমাদের মাথার উপর যে বিস্তীর্ণ আকাশ তা সৃষ্টি করেছেন কে? এই আকাশ, চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ, নক্ষত্র, নীহারিকাপুঞ্জ, ছায়াপথ এসবই সৃষ্টি করেছেন সর্বশক্তিমান আল্লাহ। আমরা দেখি প্রতিদিন পূর্বদিক রাঙা করে সূর্য উঠে। দিন হয়, আবার দিন শেষে পশ্চিম আকাশে সূর্য অস্ত যায়। রাত হয়। দিন-রাতের এ পরিবর্তন কে করেন? সর্বশক্তিমান আল্লাহই এ পরিবর্তন করেন। তিনি অসীম শক্তির অধিকারী। তাঁর হুকুমে পৃথিবীর সবকিছু চলে। মহাকাশের সবকিছুই তাঁর হুকুমে চলে।
তাঁর ব্যবস্থাপনায় চন্দ্র-সূর্য, গ্রহ-নক্ষত্র ও নীহারিকাপুঞ্জ আপন কক্ষপথে পরিচালিত হয়। কোথাও কোনো অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা বা সংঘর্ষ দেখা যায় না। মহান আল্লাহ আলো, বাতাস, আগুন, পানি সৃষ্টি করেছেন। তিনিই এসব নিয়ন্ত্রণ করেন। মেঘমালা পরিচালনা করেন। বৃষ্টিবর্ষণ করে শুকনা মাটিতে প্রাণের সঞ্চার করেন। তাঁর ইচ্ছাতেই মরুভূমির বুক চিরে সুপেয় পানির ঝরনাধারা বেরিয়ে আসে। আমরা মাটিতে বীজ বপন করি, তা হতে চারা গজায় ৷
আলো, বাতাস, পানি অনেক সময় আমাদের বিপদের কারণ হয়। অতিবৃষ্টি, জলোচ্ছ্বাসে ঘরবাড়ি, গাছপালা ডুবে যায়। মানুষ ও পশুপাখি ভেসে যায়। ভূমিকম্প, ঝড়-তুফানে ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে যায়। বড় বড় গাছপালা উপড়ে যায়। সাজানো গোছানো জনপদ লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। আমাদের আশ্রয়টুকুও থাকে না। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ‘সিডর’ ও ‘আইলা-র তাণ্ডবের কথা আমরা আজও ভুলতে পারি নি। এ ধরনের দুর্যোগে আমরা আল্লাহর উপর ভরসা রাখব। দুর্গতদের সাহায্যে এগিয়ে আসব। আলো-বাতাস, আগুন-পানি সবকিছুই মহান আল্লাহর শক্তির অধীন।
আল্লাহ শাস্তি দিতে চাইলে কেউ তাকে রক্ষা করতে পারে না। তিনি নমরুদ, ফিরআউনের মতো পরাক্রমশালী জালিম শাসকদের ধ্বংস করেছেন। হযরত নূহ (আ)-এর অবাধ্য সম্প্রদায়কে প্লাবনে ডুবিয়ে মেরেছেন। ছোট ছোট পাখি দ্বারা আবরাহা বাদশাহর বিশাল বাহিনীকে ধ্বংস করে দিয়েছেন।
আল্লাহ তায়ালা রক্ষা করলে কেউ তাকে মারতে পারে না। অত্যাচারী নমরুদ হযরত ইবরাহীম (আ)কে পুড়িয়ে মারার জন্য অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করেছিল। কিন্তু আগুন তাঁকে স্পর্শও করতে পারে নি। কারণ আগুন সর্বশক্তিমান আল্লাহর অধীন। মহান আল্লাহ ফিরআউনের হাত থেকে হযরত মূসা (আ)-কে রক্ষা করেছিলেন। ঈসা (আ)-কে ঘাতকদের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন। আমাদের প্রিয় নবি হযরত মুহাম্মদ (স)-কেও কাফিরদের হাত থেকে রক্ষা করেছেন।
আমরা মহান আল্লাহকে সর্বশক্তিমান হিসাবে বিশ্বাস করব। তাঁর কাছেই সাহায্য চাইব । কেবলমাত্র তাঁরই উপর ভরসা রাখব।
আল্লাহু সালামুন। সালাম অর্থ শান্তি । আল্লাহ্ সালামুন অর্থ আল্লাহ্ শান্তিদাতা। আমাদের মন যখন ভালো থাকে, তখন শান্তি লাগে। শরীর ভালো থাকলে মনে শান্তি থাকে।
যখন আমাদের মন খারাপ হয় তখন শান্তি লাগে না। শরীর খারাপ হলেও মনে শান্তি থাকে না। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করেন। আল্লাহ আমাদের রোগমুক্ত করেন। আমরা সুস্থ হই। শান্তি পাই।
আমাদের পরিবারে আছেন আব্বা-আম্মা, ভাইবোন। আছেন দাদা-দাদি। পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে আমরা অস্থির হয়ে পড়ি। আমাদের শান্তি থাকে না। আমরা তাঁদের সেবা করি। আল্লাহর কাছে দোয়া করি। তিনি আমাদের বিপদমুক্ত করেন। আমরা শান্তি পাই।
অনেক সময় আমাদের বইখাতা, কলম-পেন্সিল হারিয়ে যায় তখন আমাদের মন খারাপ হয়ে যায়। শান্তি থাকে না। আবার যখন তা খুঁজে পাই, তখন শান্তি পাই। আমরা যখন বন্ধু ও সহপাঠীদের সাথে মিলেমিশে থাকি, তখন ভালো লাগে। বন্ধু ও সহপাঠীদের সাথে কখনো কখনো ঝগড়া হয়। মন খারাপ হয়। তখন শান্তি লাগে না। আমরা তাড়াতাড়ি ঝগড়া মিটিয়ে ফেলব, তা হলে শান্তি লাগবে।
রাসুল (স) বলেছেন, ‘সেই ব্যক্তিই সত্যিকার মুসলমান যার মুখ ও হাত থেকে অন্য মুসলমান নিরাপদ থাকে।' রাসুল (স) সবসময় শান্তির জন্য কাজ করতেন। শান্তির জন্য অমুসলিমদের সাথেও সন্ধি করেছেন । একে অপরের সাথে দেখা হলে আমরা সালাম দেই । শান্তি কামনা করি। বলি ‘আসসালামু আলাইকুম’। অর্থ: আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক। সালামের জবাবে বলি “ওয়া আলাইকুমুস সালাম'। অর্থ: আপনার উপরও শান্তি বর্ষিত হোক । সালাম বিনিময় একটি সুন্দর নিয়ম। এতে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয় ।
প্রচুর ধনসম্পদ থাকলেই শান্তি পাওয়া যায় না। অনেক আগে কারুন নামে এক ব্যক্তি ছিল। তার ধনসম্পদ ছিল প্রচুর। কিন্তু তৃপ্তি ছিল না, শান্তি ছিল না। সে আরও সম্পদ লাভের জন্য অস্থির ছিল। সে আল্লাহর শোকর করত না। গরিবের হক আদায় করত না। যাকাত দিত না। আল্লাহর হুকুমে সে তার ধনসম্পদসহ ধ্বংস হয়ে গেল ।
আল্লাহ তায়ালা যাকে শান্তি দেন সেই শান্তি পায়। কুঁড়েঘরে থাকলেও শান্তি পায়। অভাব-অনটনেও শান্তিতে থাকে। আল্লাহ শান্তি দিলে কেউ তার ক্ষতি করতে পারে না ।
অত্যাচারী শাসক নমরুদ নিজেকে উপাস্য দাবি করেছিল। হযরত ইবরাহীম (আ) তা মানতে পারলেন না। শাস্তি দেওয়ার জন্য নমরুদ তাঁকে জ্বলন্ত আগুনের কুণ্ডে নিক্ষেপ করল। আল্লাহ তায়ালা আগুনকে বললেন, “ হে আগুন! ইবরাহীমের জন্য ঠাণ্ডা হও, শান্তিদায়ক হও।” আগুন হযরত ইবরাহীম(আ) কে স্পর্শও করতে পারল না।
একমাত্র আল্লাহ তায়ালাই শান্তিদাতা। যারা আল্লাহর হুকুম মেনে চলে তিনি তাদের শান্তি দেন। দুনিয়াতে শান্তি দেন। আখিরাতেও শান্তি দিবেন। তাঁর একটি গুণবাচক নাম “সালাম”। শান্তিদাতা।
আমরা আল্লাহ তায়ালাকে পরম শান্তিদাতা বলে বিশ্বাস করব। তাঁর কাছেই শান্তি চাইব। সবার সাথে শান্তিতে বাস করব। শান্তির পক্ষে কাজ করব।
কালিমাতু শাহাদাতিন। কালিমা অর্থ বাক্য। শাহাদত অর্থ সাক্ষ্য দেওয়া। কালিমা শাহাদত মানে সাক্ষ্য দেওয়ার বাক্য। এই কালিমা দ্বারা তাওহিদ ও রিসালাতের সাক্ষ্য দেই। এ দ্বারা আমরা একমাত্র আল্লাহ তায়ালাকেই মাবুদ হিসেবে স্বীকার করে নেই। হযরত মুহাম্মদ (স) কে আল্লাহর বান্দা ও রাসুল হিসেবে সাক্ষ্য দেই। তাওহিদ ও রিসালাতের উপর ইমান আনি। এটি ইসলামের মূল বিষয়। কালিমা শাহাদত হলো :
আশ্হাদু আল্-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু | أَشْهَدُ أَنْ لَّا إِلَهَ إِلَّا اللهُ |
ওয়াহ্দাহূ লা শারীকালাহূ ওয়া আশহাদু | |
আন্না মুহাম্মাদান আবদুহূ ওয়া রাসূলুহূ | ان مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ |
কালিমা শাহাদতে দুটি অংশ আছে :
প্রথম অংশ: আশহাদু আল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহূ লা শারীকালাহু
অর্থ : আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। তিনি এক, তাঁর কোনো
শরিক নেই ৷
এই প্রথম অংশ দ্বারা আমরা আমাদের স্রষ্টা, পালনকারী, রিজিকদাতা, পরম দয়ালু, একমাত্র আল্লাহকে মাবুদ হিসেবে স্বীকার করে নিই। আর সাক্ষ্য দেই— আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ ইবাদতের যোগ্য নয়।
ওয়াহ্দাহূ দ্বারা আমরা আল্লাহ তায়ালার একত্ববাদের স্বীকারোক্তি করি। আর ‘লা শারীকালাহূ' দ্বারা শিরককে বাতিল বলে ঘোষণা দেই।
কারণ শিরক হলো তাওহিদের বিপরীত। একজন মুমিন কোনো রকম শিরকে লিপ্ত হতে পারে না। আমরা জানি আল্লাহর কোনো শরিক নেই।
দ্বিতীয় অংশ : ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহূ ওয়া রাসুলুহূ
অর্থ : “আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি, নিশ্চয়ই মুহাম্মদ (স) আল্লাহর বান্দা ও রাসুল।”
এই দ্বিতীয় অংশ দ্বারা সাক্ষ্য দেই যে, মুহাম্মদ (স) যেমন আল্লাহর বান্দা তেমনি তিনি আল্লাহর রাসুল।
আমরা আল্লাহকে চিনতাম না। আল্লাহ সম্বন্ধে জানতাম না। কোন কাজে আল্লাহ তায়ালা খুশি হন তাও জানতাম না। মুহাম্মদ (স) আমাদের আল্লাহর পরিচয় জানিয়েছেন। তাঁর বাণী শুনিয়েছেন। আল্লাহর ইবাদত করার নিয়ম শিখিয়েছেন। তিনি নিজে আল্লাহর বিধান পালন করে আমাদের তা হাতে-কলমে শিক্ষা দিয়েছেন। আমরা আল্লাহর পথে চলব। রাসুল (স)-এর দেখানো পথে চলব। তাওহিদ ও রিসালাতে বিশ্বাস হলো ইমানের মূলকথা।
জাতীয় কবির সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে বলব :
তুমি কতই দিলে রতন, ভাই বেরাদার পুত্র স্বজন
ক্ষুধা পেলে অন্ন জোগাও, মানি চাই না মানি
খোদা তোমার মেহেরবাণী ॥
খোদা তোমার হুকুম তরক করি আমি প্ৰতি পায়
তবু আলো দিয়ে বাতাস দিয়ে বাঁচাও এ বান্দায় ৷৷
শ্রেষ্ঠ নবী দিলে মোরে, তরিয়ে নিতে রোজ হাশরে
পথ না ভুলি তাইতো দিলে পাক কুরআনের বাণী
খোদা তোমার মেহেরবাণী ॥
আমান্তু বিল্লাহি কামা হুয়া বিআস্মাইহি | stars sailystal |
ওয়া সিফাতিহী ওয়া ক্বাবিলতু জামী—আ | وَ صِفَاتِهِ وَقَبِلْتُ جَمِيعَ |
আর্কামিহী ওয়া আরকানিহী | أَحْكَامِه وَ أَرْكَانِه |
অর্থ : আমি ইমান আনলাম আল্লাহর উপর ঠিক তেমনি যেমন আছেন তিনি, তাঁর সব নাম ও গুণাবলিসহ। আর মেনে নিলাম তাঁর সব হুকুম-আহকাম ও বিধি-বিধান।
ইমান অর্থ বিশ্বাস। আর মুজমাল অর্থ সংক্ষিপ্ত । ইমান মুজমাল মানে সংক্ষিপ্ত বিশ্বাস। ইসলামের মূল বিষয়গুলোকে সংক্ষেপে বিশ্বাস ও স্বীকার করাকে বলে ইমান মুজমাল। ইমান মুজমাল দ্বারা সংক্ষিপ্ত কথায় ইমানের ঘোষণা দেওয়া হয়।
আমাদের মাবুদ মহান আল্লাহ। তিনি এক, অদ্বিতীয়, অতুলনীয়। তাঁর কোনো শরিক নেই । তাঁর আছে অনেক সুন্দর গুনবাচক নাম । আল্লাহর সত্তায় যেমন বিশ্বাস করতে হয় তেমনি তাঁর সিফাত বা গুণাবলিতেও বিশ্বাস করতে হয়। তাঁর সত্তার সাথে কারও তুলনা হয় না। তেমনি তাঁর গুণের সাথে তুলনা করা যায় এমন কোনো কিছুই নেই। আল্লাহ তায়ালা বলেন, “তাঁর মতো কোনো কিছুই নেই ।”
একজন মুমিন মুসলিমকে আল্লাহ তায়ালার একক সত্তায় বিশ্বাস করতে হয়। তাঁর গুণাবলিতে বিশ্বাস করতে হয়। তারপর আল্লাহর আহকাম ও আরকান বা বিধি-বিধান গ্রহণ করতে হয়। তাঁর আদেশ-নিষেধ মেনে চলতে হয়। আমাদের জন্য যা কল্যাণকর, যা ভালো তিনি তা গ্রহণ করতে বলেছেন। আর যা অকল্যাণকর, যা মন্দ তা বর্জন করতে বলেছেন। এই গ্রহণ ও বর্জন মিলেই হলো ইমান। ইমান মুজমাল খুব সংক্ষিপ্ত। কিন্তু এর বিষয়বস্তু ব্যাপক। এর তাৎপর্য গভীর ।
আমরা আল্লাহ তায়ালার সত্তায় ও গুণাবলিতে বিশ্বাস করব। মহান আল্লাহর বিধি-বিধান ও আদেশ-নিষেধ মেনে নেব।
পরিকল্পিত কাজ : শিক্ষার্থীরা ইমানে মুজমালের অর্থ সুন্দর করে খাতায় লিখবে। |
আমান্তু বিল্লাহি ওয়ামালাইকাতিহী ওয়াকুতুবিহী | |
ওয়ারুসুলিহী ওয়াইয়াওমিল আখিরি ওয়ালকাদরি | |
খাইরিহী ওয়াশাররিহী মিনাল্লাহি তাআলা | خَيْرِهِ وَشَرِهِ مِنَ اللَّهِ تَعَالَى |
ওয়াল বা‘সি বা'দাল মাউত । | وَالْبَعْثِ بَعْدَ الْمَوْ |
অর্থ : আমি ইমান আনলাম আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতা, তাঁর কিতাব ও তাঁর রাসুলগণের উপর। আরও ইমান আনলাম শেষ দিবসে ও তকদিরের ভালোমন্দে যা আল্লাহর পক্ষ থেকে হয় এবং মৃত্যুর পর পুনরুত্থানে।
ইমান অর্থ বিশ্বাস। আর মুফাসসাল অর্থ বিস্তারিত । ইমান মুফাসসাল অর্থ বিস্তারিত বিশ্বাস। আমরা মুমিন। ইসলামের কতকগুলো মূল বিষয়ের উপর আমাদের ইমান আনতে হয়। আমরা এর আগে যে বিষয়গুলোকে সংক্ষিপ্ত কথায় স্বীকার করেছি, এখন সে বিষয়গুলোকে বিস্তারিত ভাবে জানব। বিস্তারিতভাবে স্বীকার করব। সে জন্য একে বলা হয় ইমান মুফাসসাল ।
ইমান মুফাসালে আমরা সাতটি বিষয়ের উপর ইমান আনি। বিষয়গুলো হলো :
১. আল্লাহ | ২. ফেরেশতা | ৩. কিতাব |
৪. রাসুলগণ | ৫. শেষ দিবস | ৬. তকদির |
৭. মৃত্যুর পর পুনরুত্থান |
১। ইমানের প্রথম বিষয় : আল্লাহ তায়ালার উপর বিশ্বাস
ইমানের প্রথম কথাই হলো আল্লাহ তায়ালার উপর বিশ্বাস। আমরা বিশ্বাস করি আল্লাহ তাঁর সত্তায় এক ও অদ্বিতীয়। তাঁর কোনো শরিক নেই। তিনি তাঁর গুণাবলিতেও অদ্বিতীয় ও অতুলনীয়। তিনি অনাদি, অনন্ত। তিনিই প্রথম, তিনিই শেষ। যখন কোনো কিছুই ছিল না তখন ছিলেন তিনি। আবার একদিন সবকিছুই ধ্বংস হয়ে যাবে তখন তিনিই থাকবেন। মহান আল্লাহ সবকিছু জানেন, সবকিছু শোনেন ও দেখেন। আসমান জমিনের সবকিছু তাঁর সৃষ্টি। তিনি সকল সৃষ্টির পালনকর্তা। তিনি পরম দয়ালু। তিনিই সবকিছুর মালিক। আমরা ভালো কাজ করলে তিনি খুশি হন। মন্দ কাজ করলে তিনি অসন্তুষ্ট হন। আমরা আল্লাহর উপর ভরসা রেখে ভালো কাজ করব।
২। ইমানের দ্বিতীয় বিষয় : মালাইকা বা ফেরেশতাগণে বিশ্বাস
ফেরেশতাগণ আল্লাহ তায়ালার বিশেষ সৃষ্টি। তাঁরা নূরের তৈরি। নূর মানে আলো। তাঁরা আল্লাহর আদেশে বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত। তাঁরা কখনো আল্লাহর হুকুম অমান্য করেন না। তাঁদের পানাহারের প্রয়োজন নেই। আল্লাহর জিকিরই তাঁদের জীবিকা। তাঁদের সংখ্যা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। তাঁদের মধ্যে চারজন ফেরেশতা প্রসিদ্ধ।
ক. হযরত জিবরাইল (আ) : তিনি নবি-রাসুলগণের কাছে আল্লাহর ওহি নিয়ে আসতেন। ওহি মানে আল্লাহর বাণী।
খ. হযরত মিকাইল (আ) : তিনি জীবের জীবিকা বণ্টন ও মেঘবৃষ্টির দায়িত্বে নিয়োজিত ।
গ. হযরত আযরাইল (আ) : তিনি আল্লাহর হুকুমে জীবের জান কবজ করেন।
ঘ. হযরত ইসরাফিল (আ) : তিনি শিঙ্গা হাতে আল্লাহর আদেশের অপেক্ষায় আছেন । তিনি প্রথম ফুঁ দেবেন, তাতে সকল সৃষ্টি ধ্বংস হয়ে যাবে। দ্বিতীয় ফুঁ দেবেন তখন সবকিছু জীবন ফিরে পাবে।
একদল ফেরেশতা আছেন, যারা মানুষের ভালো-মন্দ কাজের হিসাব রাখেন। তাঁদের বলে কিরামান কাতিবিন। মানে সম্মানিত লেখকগণ। মুনকার-নকির নামে আরও ফেরেশতা আছেন। তারা কবরে প্রশ্ন করবেন। প্রশ্ন করবেন- আল্লাহ, রাসুল ও দীন সম্বন্ধে। আল্লাহর অনুগত বান্দারা এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন।
৩। ইমানের তৃতীয় বিষয় : আসমানি কিতাবে বিশ্বাস
আল্লাহ তায়ালা নবি-রাসুলের কাছে ওহি পাঠিয়েছেন। ওহি হলো আল্লাহর বাণী। আল্লাহর বাণীসমূহের সমষ্টিকে বলে আসমানি কিতাব। আসমানি কিতাবে আছে মানুষের জন্য হিদায়াত। মুক্তির কথা।
আসমানি কিতাব হলো ১০৪ খানা। ৪ খানা বড়। আর ১০০ খানা ছোট। ছোট কিতাবকে সহীফা বলে। সহীফা মানে পুস্তিকা ।
৪ খানা বড় কিতাব হলো :
১. তাওরাত : হযরত মূসা (আ)-এর উপর অবতীর্ণ হয়েছিল।
২. যাবূর : হযরত দাউদ (আ)-এর উপর অবতীর্ণ হয়েছিল।
৩. ইনজিল : হযরত ঈসা (আ)-এর উপর অবতীর্ণ হয়েছিল।
৪. কুরআন মজিদ : হযরত মুহাম্মদ (স)-এর উপর অবতীর্ণ হয়েছিল।
কুরআন মজিদ সর্বশেষ আসমানি কিতাব। এতে আছে কিয়ামত পর্যন্ত বিশ্বের সকল মানুষের সব সমস্যার সমাধান, ভালো হওয়ার শিক্ষা। আমরা সকল কিতাবে বিশ্বাস করব। আর কুরআন মজিদের শিক্ষা মেনে চলব।
৪। ইমানের চতুর্থ বিষয় : নবি-রাসুলে বিশ্বাস
আমরা আগেই জেনেছি মানুষের হিদায়াতের জন্য আল্লাহ তায়ালা ওহি পাঠিয়েছেন। ওহি আসত নবি-রাসুলগণের কাছে। নবি-রাসুলগণ মানুষের শিক্ষক। তাঁরা আদর্শ শিক্ষক। তাঁরা ছিলেন নিঃস্বার্থ মানবদরদি। তাঁরা মানুষকে আল্লাহর পথে ডাকতেন । তাঁকে খুশি করার পথ দেখাতেন। কিতাবে বিশ্বাস করা যেমন ইমানের অঙ্গ, নবি-রাসুলে বিশ্বাস করাও তেমনি ইমানের অঙ্গ।
প্রথম নবি হলেন হযরত আদম (আ)। আর শেষ নবি হলেন হযরত মুহাম্মদ (স)। এই দুজনের মাঝে অনেক নবি-রাসুল এসেছেন। আল্লাহ বলেন “এমন কোনো জনপদ নেই যেখানে আমি কোনো নবি পাঠাইনি।”
কুরআন মজিদে ২৫ জন নবি-রাসুলের নাম উল্লেখ আছে। যেমন হযরত আদম (আ), হযরত ইদরীস (আ), হযরত নূহ (আ), হযরত ইবরাহীম (আ), হযরত ইসমাঈল (আ), হযরত ইসহাক (আ), হযরত ইয়াকুব (আ), হযরত ইউসূফ (আ), হযরত হূদ (আ), হযরত সালিহ (আ), হযরত লূত (আ), হযরত শুআইব (আ), হযরত আইয়্যুব (আ), হযরত জাকারিয়া (আ), হযরত দাউদ (আ), হযরত সুলাইমান (আ), হযরত মূসা (আ), হযরত ঈসা (আ), হযরত মুহাম্মদ (স) । আমরা সকল নবি-রাসুলগণে বিশ্বাস করব। সম্মান করব। আর সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবি হযরত মুহাম্মদ (স)-এর আদর্শ মেনে চলব।
৫। ইমানের পঞ্চম বিষয় : শেষ দিবসে বিশ্বাস
আমরা এই দুনিয়ায় চিরদিন বেঁচে থাকি না। এ জীবন চিরস্থায়ী নয়, ক্ষণস্থায়ী আমাদের যেমন জন্ম আছে, তেমনি মৃত্যুও আছে। সকল প্রাণীরই মৃত্যু আছে। যার জীবন আছে তার মৃত্যু আছে। আমাদের সুন্দর পৃথিবীও একদিন ধ্বংস হয়ে যাবে। শেষ হয়ে যাবে। একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কোনো কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না ।
আমাদের মৃত্যুর পরের জীবনকে বলে আখিরাত। আখিরাত মানে পরকাল। মৃত্যুর পরেই এ জীবনের শুরু হয়। কবর, কিয়ামত, হাশর, জান্নাত, জাহান্নাম-এসবই আখিরাতের জীবনের অন্তর্ভুক্ত। আখিরাতের জীবনের শুরু আছে শেষ নেই। সে জীবন অনন্ত কালের । আল্লাহ বলেন, “এ দুনিয়ার জীবনতো অস্থায়ী উপভোগের বস্তু । আর আখিরাতই হচ্ছে চিরস্থায়ী আবাস।”
ইমানের অন্যান্য বিষয়ের উপর বিশ্বাস যেমন জরুরি, আখিরাত বা শেষ দিবসে বিশ্বাসও তেমনি জরুরি। দুনিয়ায় যে যেমন কাজ করবে আখিরাতে তেমনি ফল ভোগ করবে। ভালো কাজ করলে আখিরাতে পুরস্কার পাবে। আর মন্দ কাজের জন্য শাস্তি ভোগ করতে হবে। শেষ দিবস বা আখিরাতে বিশ্বাসী ব্যক্তি তার কাজকর্মে সতর্ক হয়। পুরস্কারের আশায় ভালো কাজ করে। আর শাস্তির ভয়ে মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকে। এতে তার নৈতিক চরিত্র উন্নত হয় ৷
কবি যথার্থই বলেছেন,
দুনিয়াটা আখিরাতের
খামার বাড়ি ভাই
ভবের হাটের ক্ষেতখামারে
ফসল ফলান চাই ৷
এই ফসলের নেইকো জুড়ি
এক কণা তার হয় না চুরি
হিসাব লেখেন দুই মুহরী
সদা সৰ্বদাই ॥
অচিন দেশের যাত্রী সবাই
টারমিনালে ক্ষণিকের ঠাঁই
কখন যে হায় ঘণ্টা বাজে
ঘড়ির সময় হলে ॥
—কবি সাবির আহমেদ চৌধুরী
৬। ইমানের ষষ্ঠ বিষয় : তকদিরে বিশ্বাস
তকদির মানে ভাগ্য। আমাদের ভাগ্যের নিয়ন্ত্রণকারী আল্লাহ তায়ালা। আমাদের জীবনে যা ঘটে, যা হয় সবই হয় আল্লাহর নির্ধারিত হুকুমে। এই নির্ধারিত হুকুমকে বলে তকদির। আমাদের ভাগ্যে কী আছে, আমরা তা জানি না। আমরা চেষ্টা করব, কাজ করে যাব। আর ফলাফলের জন্য আল্লাহর উপর নির্ভর করব। সফল হলে শোকর করব। বিফল হলে সবুর করব, তকদির বলে মেনে নিব। তকদিরে বিশ্বাস মানুষকে অলস করে না।
আশায় উজ্জীবিত করে।
৭। ইমানের সপ্তম বিষয় : মৃত্যুর পর পুনরুথানে বিশ্বাস
মৃত্যুই আমাদের শেষ কথা নয়। ইহকালে আমরা যেসব কাজ করি তার জবাবদিহি করতে হবে পরকালে। সকলকে আবার জীবিত করে হাশরের ময়দানে উঠানো হবে। সেখানে হিসাব-নিকাশ ও সাক্ষ্যপ্রমাণ নিয়ে বিচার করা হবে। বিচারক হবেন মহান আল্লাহ । ভালো কাজের পুরস্কার হিসেবে জান্নাত দেওয়া হবে। জান্নাত হলো পরম সুখের স্থান। যারা পাপ করবে, খারাপ কাজ করবে তাদের শাস্তির জন্য নিক্ষেপ করা হবে জাহান্নামে। জাহান্নাম হলো চরম দুঃখ-কষ্ট ও ভীষণ শাস্তির স্থান।
পুনরুত্থানে বিশ্বাস মানুষকে দায়িত্বশীল করে তোলে। পুরস্কারের আশায় সৎকর্মশীল করে তোলে। আর শাস্তির ভয়ে মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে। এতে নৈতিক চরিত্র উন্নত হয়। আমরা-
একমাত্র আল্লাহ তায়ালাকেই মাবুদ বলে বিশ্বাস করব।
আল্লাহর ফেরেশতাগণে বিশ্বাস করব।
আল্লাহর রাসুলগণকে বিশ্বাস করব।
শেষ দিবসে বিশ্বাস করব। তকদিরে বিশ্বাস করব।
মৃত্যুর পর পুনরুত্থানে বিশ্বাস করব।
আখিরাতের পুরস্কারের আশায় ভালো কাজ করব।
আখিরাতের শাস্তির ভয়ে মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকব।
আমাদের নৈতিক চরিত্র উন্নত করব।
পরিকল্পিত কাজ:
১. শিক্ষার্থীরা ইমান মুফাস্সালের অর্থ সুন্দর করে খাতায় লিখবে।
২. শিক্ষার্থীরা চারজন প্রধান ফেরেশতার নাম ও তাঁদের কাজ খাতায় লিখবে।
৩. শিক্ষার্থীরা দশজন নবি-রাসুলের নাম খাতায় লিখবে।